মাহমুদ ফারুক:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে গরুর গোস্তের দাম কেজি প্রতি ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী।
পৌরসভার মেয়র সোমবার বিকালে রামগঞ্জ ও সোনাপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ গোস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ প্রস্তাব রাখেন।
রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী এসময় প্রতি কেজি গোস্তের মধ্যে দেড়শো গ্রাম হাঁড়, পঞ্চাশ গ্রাম চর্বি ও আটশত গ্রাম গোস্ত রাখার অনুরোধ করেন। এ প্রস্তাবের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার সকালে ক্রেতারা রামগঞ্জ শহরের কয়েকটি গোস্তের দোকানে গিয়েও গোস্ত কিনতে পারেননি।
আবদুস সালাম নামে এক ক্রেতা এসেছেন গরুর গোস্ত কিনতে। ইফতারের পর মেহমান আসবে। কিন্তু বাজারে এসে দেখেন সবকটি গরুর গোস্তের দোকান খালি। ব্যবসায়ীরা দোকানে বসে থাকলেও তাদের কাছে কোন গোস্ত নেই। রামগঞ্জ সবজি ও মাছ বাজার, সোনাপুর বাজার, পুরাতন সবজির বাজার এলাকায় কোথাও গরুর গোস্ত বিক্রি হচ্ছে না।
তবে রামগঞ্জ সবজি বাজারের সামনের গোস্ত ব্যবসায়ী মুছুয়া কসাই (জুম্মন মিয়া) জানান, হাঁড়সহ গরুর গোস্ত কেজি প্রতি বিক্রি করেছি ৭৫০টাকা। হাঁড় ছাড়া সাড়ে ৮শ বা ৯শ টাকার মতো পড়ে কেজি প্রতি। আমাদের কি করার আছে। আমরা পাইকারী কিনে খুচরোয় বিক্রি করি।
বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বেশি হওয়ায় রামগঞ্জ ও সোনাপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতাদের সাথে জরুরী বৈঠক করেন পৌর মেয়র। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌর স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আলমগীর কবির, রামগঞ্জ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন সেলিম, সোনাপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি লিয়াকত হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সবজি ব্যবসায়ী মোঃ সেলিম মিয়া, গোস্ত ব্যবসায়ী নজির আহম্মেদ ও জুম্মন কসাইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।
মতবিনিময় সভার পরদিন মঙ্গলবার গরুর গোস্ত বিক্রেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে রামগঞ্জ ও সোনাপুর বাজারে মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেন। রামগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জ ও সোনাপুর বাজারে গত দুই দিনেও কোনো গরু জবাই হয়নি।
সরজমিনে আজ বুধবার রামগঞ্জ পৌর সবজি-মাছ ও গোস্তের বাজারে শাক-সবজি, মাছ ও মুদি দোকান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে গরু গোস্তের দোকান।
আগামী রোজার মাস গরুর গোস্ত না কিনে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় ভোক্তারা।
তাঁরা বলেন, সিন্ডিকেট করে মাংস ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের প্রতিনিয়ত ঠকাচ্ছেন। অধিক দাম, আবার নিজের পছন্দের কোনো মাংসই দেওয়া হয় না ক্রেতাদের। অতিরিক্ত হাড় ও বেশি চর্বি দেওয়া হয় ক্রেতাদের। দাম নির্ধারন করায় পৌর মেয়রকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয় লোকজন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারীর সাথে। তিনি জানান, গরুর গোস্ত দেশবাসী কিছুদিন না কিনলে এমনিতে সব সোজা হয়ে যাবে। যুব সমাজকে যুক্ত করে বিকল্পভাবে গোস্তসহ নিত্যপন্য ন্যায্যমুল্যে বিক্রি করার আহবান জানান তিনি।