পূর্ব বঙ্গোপসাগরে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে, চীনা প্রকৌশল দলের সদস্যরা এবং লাল রঙের পোশাক পরা স্থানীয় কর্মীরা বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্র-ভূমি সমন্বিত অতি-বৃহৎ তেল সঞ্চয় ও পরিবহন প্রকল্প নির্মাণের জন্য নিবিড় ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সবসময় তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বিদেশ থেকে ট্যাংকারে চট্টগ্রামে পরিবহন করা হয়। কিন্তু বন্দরের পানির কম গভীরতার কারণে, ১ লাখ টনের তেলের ট্যাঙ্কারগুলো কেবল বন্দরের বাইরে নোঙর করা যায়। পরে ছোট ট্যাঙ্কার দিয়ে বন্দরে পরিবহন করা হয়। জাহাজ আনলোড করার এই পদ্ধতিটি অদক্ষ, ব্যয়বহুল ও পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি বহন করে।
২০১৯ সালের শুরুতে, চীনা সরকারের দেওয়া সফ্ট ঋণ ও চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাঙ্কের অর্থায়নে চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ব্যুরোর ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি একক-পয়েন্ট মুরিং ও ডাবল-লাইন পাইপলাইন সিস্টেম প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করে। বাংলাদেশের প্রথম সমুদ্র-ভূমি সমন্বিত অতি-বৃহত তেল সংরক্ষণস্থল এবং পরিবহন প্রকল্প হিসেবে, প্রকল্পটির একাধিক কাজ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে একক-পয়েন্ট মুরিং সিস্টেম, ট্যাঙ্ক খামার, স্টেশন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নির্মাণের পাশাপাশি ২২০ কিলোমিটার অফশোর এবং তীরবর্তী তেল পাইপলাইন স্থাপন করা।
প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক পক্ষের প্রতিনিধি বুলেন্ট তেমির তামার বলেছেন, বর্ষার বৃষ্টিপাত এবং সমুদ্রের পানির পরিবেশের কারণে প্রকল্পটি খুব চ্যালেঞ্জিং। তবে চীনা কোম্পানি সর্বদা দক্ষতার সাথে সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম।
জানা গেছে, প্রকল্পটি এখন অপারেশনের জন্য প্রস্তুত। একবার চালু হলে, এটি বাংলাদেশের জ্বালানি-শক্তির সংকট অনেকটাই কমিয়ে দেবে এবং বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন শক্তি ধমনীতে পরিণত হবে। এটি প্রতিবছর অপরিশোধিত তেল পরিবহন খরচ ১২৮ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটির নির্মাণ-প্রক্রিয়া চলাকালে বিপুলসংখ্যক স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রকল্পটি বাংলাদেশে প্রায় ৪ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: চায়না মিডিয়া গ্রুপ।