শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
Logo সারাদেশের সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা Logo কোটা সংস্কার আন্দোলন: দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত ৫ Logo বিদ্যালয়ে না এসে বেতনভাতা উত্তোলন; বদলি হলেন বিতর্কিত সে-ই প্রধান শিক্ষক Logo নতুন যুগে চীনের সংস্কারনীতি: মূল উদ্দেশ্য চর্চা করে উদ্ভাবনী উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা Logo চীন সামুদ্রিক পরিবেশের মান অব্যাহতভাবে উন্নত করেছে:শ্বেতপত্র প্রকাশ Logo চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য সুযোগ প্রদান অব্যাহত রাখবে:সিএমজি’র সিজিটিএন পরিচালিত জরিপ Logo সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরনের জন্মদিন পালন হলো হাডসন নদীর বুকে Logo চীন বাংলাদেশকে জাতীয় উন্নয়নে সহায়তা করতে ইচ্ছুক:হাসিনার সাথে বৈঠকে সি Logo মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ প্রচার করা:চীনে দশম বিশ্ব সভ্যতা ফোরাম Logo ভারত-চীন সম্পর্কের বৈশ্বিক তাৎপর্যও রয়েছে: বিশেষ বার্তায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নোটিশঃ
যে কোন বিভাগে প্রতি জেলা, থানা/উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘bdpressnews.com ’ জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিক নিয়োগ ২০২৩ চলছে। বিগত ১ বছর ধরে ‘bdpressnews.com’ অনলাইন সংস্করণ পাঠক সমাজে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাঠকের সংখ্যায় প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছে তরুণ, অভিজ্ঞ ও আন্তরিক সংবাদকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ‘bdpressnews.com‘ পত্রিকায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার এ ধাপ

চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের সি পিংয়ে গড়ে উঠেছে বিখ্যাত তোফু শিল্প

Reporter Name / ৯৪ Time View
Update : শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩, ৪:২৫ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
শিল্প সমৃদ্ধ হলে গ্রাম সমৃদ্ধ হয়, গ্রাম সমৃদ্ধ হলে দেশ সমৃদ্ধ হয়। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০২২ সালে সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রাম বিষয়ক সম্মেলনে জোর দিয়ে বলেন, গ্রামের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য শিল্পের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প উন্নয়নকে সহায়তা দিতে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং বৈশিষ্ট্যপূর্ণ খাবারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের সি পিং জেলার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ খাবার তোফুর গল্প জানবো।
গ্রীষ্মকালের এক দুপুরে ইয়ুন নান প্রদেশের হোং হ্য হানি ও ই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সি পিং জেলার পুরাতন নগরে বারবিকিউ রেস্টুরেন্টের মালিক উ হুয়া চুলার পাশে বসে তোফু গ্রিল করছেন। পাশাপাশি তার রেস্টুরেন্টে আসা মানুষের কাছে সি পিং তোফুর বৈশিষ্ট্য নিয়ে তুলে ধরছেন।
পাঁচ ইউয়ান দিয়ে ১০ টুকরা তোফু কেনা যায় এবং সি পিং জেলায় প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেন্টে তোফু বিক্রি হয়। উ হুয়া বলেন, “তোফু স্থানীয় খাবার। সিপিং জেলার বাইরে আপনারা এই স্বাদের তোফু পাবেন না। কারণ এখানকার তোফু তৈরিতে বিশেষ পানি ব্যবহার করা হয়।”
স্থানীয়রা পুরাতন নগরে একটি কুয়ার পানিকে ‘টক পানি’ বলে। সাধারণত তোফু তৈরিতে জিপসাম বা বিটারন ব্যবহার করা হয়। তবে সি পিং জেলায় টক পানি দিয়ে তোফু তৈরি করা হয়। সি পিং ছাড়া কোথায়ও এ টক পানি পাওয়া যায় না বলে সি পিং তোফু স্থানীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবারে পরিণত হয়েছে। এক শ’ বছরেরও বেশি আগে থেকে সি পিং তোফু দেশব্যাপী বিখ্যাত আর বর্তমানে তোফু স্থানীয় একটি বড় শিল্পে পরিণত হয়েছে।
অনেক পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ দিনের বেলায় তোফু বারবিকিউ খেতে পছন্দ করে বলে সাধারণত বাবিকিউ রেঁস্তোরা সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতিদিন ২-৩ হাজার তোফু বিক্রি হয় সেখানকার রেঁস্তোরাগুলোতে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালের শেষ দিকে সি পিং জেলায় সয়াপণ্যের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টন এবং এ শিল্পের আকার ছিল ৪৩৩ দশমিক ৫ কোটি ইউয়ান। এ শিল্পে ১২ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে সয়াপণ্যের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৭৩ হাজার টন, যার আর্থিক মূল্য ছিল ২২৫ কোটি ইউয়ান।
বিশাল এ অঙ্কের পেছনে রয়েছে সি পিং জেলার তোফু দিয়ে বড় শিল্প গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা। ছোট তোফু দিয়ে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সি পিং জেলা ব্র্যান্ড, খাবারের মান, বাজারসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করে। তোফুকে কেন্দ্র করে পরিবেশবান্ধব খাবার প্রক্রিয়াকরণ শিল্প সামনে এগিয়ে চলেছে এখানে।
বেইমেন তোফু কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ সালে। একটি ছোট ব্যবসা থেকে বড় কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে এটি। আগে পারিবারিক এ কারখানায় দূষিত পানি নিষ্কাশনে কোনও ব্যবস্থা ছিল না এবং ছোট কয়লা-চালিত বয়লার বায়ু দূষণ করতো। সি পিং জেলা সয়াপণ্য শিল্প উন্নয়নের ওপর খুব গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ শিল্পের ক্লাস্টার এগিয়ে নিচ্ছে। সয়াপণ্য শিল্প পার্ক, সাংস্কৃতিক শিল্প পার্ক এবং পরিবেশ-বান্ধব নিবিড় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে এখানে। স্থানীয় ৪০টি কোম্পানি এবং ১৪৩টি পারিবারিক দোকান এ শিল্পে যুক্ত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সয়াপণ্যের সমন্বিত উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়িত হয়েছে।
স্থানীয় সরকারের সাহায্যে আপগ্রেডেড হয়ে তোফু কারখানাসহ বেইমেন তোফু কোম্পানি একটি আধুনিক কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ক্রয়, উৎপাদন, পরিবহন ও স্টোরেজসহ নানা কার্যক্রমে যুক্ত এ কোম্পানি। ২০২২ সালে বেইমেন তোফু কারখানা ইয়ুন নানের সম্মানিত ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
সি পিং তোফু পরিবহন কঠিন এবং দীর্ঘসময় এটা সংরক্ষণ করা যায় না। এগুলো এর বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা ছিল। এ সমস্যা সমাধানে শিল্প পার্কের কোম্পানিগুলো ইন্সট্যান্ট তোফু, হিমায়িত তোফুসহ নতুন পণ্য আবিষ্কার করে।
সি পিং জেলার বেই ইয়াং তোফু কারখানার মালিক হ্য ওয়েন ইং বলেন, আগে তারা শুধু ফ্রেশ তোফু বিক্রি করতেন, তবে পার্কে হিমাগার স্থাপিত হওয়ার কারণে এখন তারা অনেক বেশি তোফু তৈরি ও বিক্রি করতে পারেন এবং নতুন ধরনের সয়াপণ্য তৈরি করতে পারেন।
সি পিং জেলায় একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে, যার সঙ্গে যুক্ত ৫০টির বেশি ই-কমার্স কোম্পানি। পাশাপাশি বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে চীনের ২০টি প্রদেশে এখানকার পণ্য বিক্রি করা হয়। সুন ফেংসহ এক্সপ্রেস কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে চীনের ১৯০টিরও বেশি শহরে সি পিং জেলার তোফু পাঠানো হয়। সি পিংয়ের ৬টি কোম্পানি তাদের পণ্য বিদেশেও রফতানি করে। তাদের তৈরি তোফু কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বডিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিক্রি হয়।
২০২০ সালে সি পিং তোফু অনলাইনে জনপ্রিয়তা পায় আর তখন থেকে অনলাইনে সি পিং তোফুর বিক্রি বাড়ে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক লাইভ অনুষ্ঠানে ৫ হাজার অর্ডার আসে সি পিং তোফুর জন্য, যার আর্থিক মূল্য ছিল ২ লাখ ইউয়ানেরও বেশি।
সি পিং তোফুর ইতিহাস ৬শ’ বছরের বেশি সময়ের। ২০১৭ সালের জুন মাসে সি পিং তোফু ইয়ুন নান প্রদেশের চতুর্থ দফার অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়। সি পিং তোফুকে সবার মধ্যে জনপ্রিয় করার জন্য এ জেলা ৮০টি তোফু রেসিপি তৈরি করেছে এবং এখানকার তোফু দিয়ে তৈরি ভোজ নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। তোফু শিল্প পার্কে রয়েছে তোফুর দোকান।
পর্যটকরা এখানে এসে তোফু তৈরির প্রক্রিয়া দেখার পাশাপাশি দোকান থেকে পণ্য কিনতে পারেন। ভবিষ্যতে সি পিং জেলায় তোফু জাদুঘর নির্মাণ করবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সি পিং জেলার প্রধান চাং পেং ছেং জানান, ছোট তোফু নিয়ে বড় শিল্প গড়ে তুলবেন তারা। ছোট তবে সুন্দর, বিশেষ ও উচ্চ মানের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে চান তার। তাদের প্রত্যাশা এখানে বড় ব্র্যান্ড তৈরি হবে, বিশাল বাজারে তাদের পণ্য বিক্রি হবে এবং বৃহৎ অর্থনৈতিক ফল আসবে। ছোট তোফুও বড় শিল্প হবে।
সূত্র: শিশির, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Design & Developed by : BD IT HOST