২৮শে ডিসেম্বর গত (শনিবার) বেইজিংয়ে চীন ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছেন, গত অক্টোবরে ব্রিকস শীর্ষসম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সুষ্ঠুভাবে সাক্ষাত করেছেন। যা দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশলগত দিক-নির্দেশনা দিয়েছে।
তিনি জানান, চীন ও ইরান সার্বিক কৌশলগত অংশীদার এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দুই দেশের সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এর ভিত্তি হচ্ছে দুই দেশের জনগণের মজবুত ও গভীর ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব এবং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আধ শতাব্দীরও বেশি সময়ের পারস্পরিক আস্থা ও সমর্থন। চীন ও ইরানের সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার শুধু দুই দেশের গণকল্যাণকর নয়, বরং আঞ্চলিক ও বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বৃদ্ধির জন্যও অবদান রাখবে।
ওয়াং ই জানিয়েছেন, দুই পক্ষের উচিত অব্যহতভাবে পারস্পরিক মৌলিক স্বার্থ বিষয়ে পারস্পরিক সমর্থন দেওয়া, স্থিতিশীলভাবে সহযোগিতা এগিয়ে নেয়া এবং বহুপাক্ষিক খাতে সমন্বয় জোরদার করা।
ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, আজকাল বিশ্বের অস্থির ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখে আমাদের উচিত একতা ও সহযোগিতা জোরদার করা, শক্তিশালী রাজনীতির বিরোধিতা করা এবং একযোগে প্রকৃত বহুপক্ষবাদ প্রচার করা এবং আরও ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত বিশ্ব শাসনের ব্যবস্থা নির্মাণকে এগিয়ে নেয়া।
দুই পক্ষ চীন-ইরান সার্বিক সহযোগিতা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এগিয়ে নেয়া, রাজনীতি ও কূটনীতি, অর্থ-বাণিজ্যসহ একাধিক খাতে, দেশ শাসনের অভিজ্ঞতা বিনিময় জোরদার করা, যুব, শিক্ষা, ক্রীড়া, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, পর্যটন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, সম্প্রচার এবং টেলিভিশনসহ নানা খাতে বিনিময় ও সহযোগিতা উন্নত করতে একমত হয়েছে।
বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়েও দুই পক্ষ মতবিনিময় করেছে। দুই পক্ষ মৈত্রীসুলভ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, মধ্যপ্রাচ্য হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের ভূমি, তা বড় দেশের শক্তির রাজনীতির ক্ষেত্র নয়। মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের ভবিষ্যতের ভাগ্য মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের হাতে থাকা উচিত। দুই পক্ষ একযোগে আহ্বান জানায় যে, ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানে ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার সম্মান ও পুনরুদ্ধার করা দরকার এবং দখলদারিত্ব বন্ধ করা দরকার।
দুই পক্ষ ইরানের পারমাণবিক সমস্যা নিয়েও মতবিনিময় করেছে। ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, চীনের সর্বদা অবস্থান হচ্ছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পদ্ধতিতে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করা, সার্বিক চুক্তি রক্ষা করা এবং সংলাপ ও আলোচনা পুনরুদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের উচিত গঠনমূলক ভূমিকা রাখা।
সূত্র:আকাশ-তৌহিদ-স্বর্ণা,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।