যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রাষ্ট্রদূত শিয়ে ফেং গত বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং জয়-জয় সহযোগিতার তিনটি নীতি চীন-মার্কিন সম্পর্কের পথের গভীর অভিজ্ঞতার সারাংশ এবং নতুন যুগে সহাবস্থানের সঠিক পথ।
একই দিনে, শিয়ে ফেং চীন-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে মার্কিন-চীন ব্যবসায়িক পরিষদের নৈশভোজে একটি ভিডিও বক্তৃতা দেন। ভিডিওতে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের একে অপরের সাথে, ইতিহাসের সঠিক পথে দাঁড়িয়ে, সময়ের প্রবণতা এবং জনগণের ইচ্ছার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যাতে স্থিতিশীল, স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই পথ ধরে চীন-মার্কিন সম্পর্ক সামনে এগুতে পারে।
শিয়ে ফেং বলেছেন যে মতভেদগুলো বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার চালিকা শক্তি হওয়া উচিত, দ্বন্দ্ব বা বিরোধিতা করার অজুহাত নয়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্য একে অপরের প্রতি চ্যালেঞ্জের পরিবর্তে সুযোগ। বিশাল পৃথিবীতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিজ নিজ উন্নয়ন ও অভিন্ন সমৃদ্ধিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পারে। উভয়পক্ষের একে অপরের সার্বভৌমত্ব এবং ভূখন্ডের অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত, একে অপরের উন্নয়নের পথ সম্মান করা উচিত, একে অপরের উন্নয়নের অধিকারকে সম্মান করা উচিত এবং একে অপরের মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগকে সম্মান করা উচিত।
শিয়ে ফেং উল্লেখ করেছেন যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং পারমাণবিক শক্তি হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকা উভয়পক্ষের দায়িত্ব। চীনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রতিযোগী হিসাবে বিবেচনা করা, সবচেয়ে গুরুতর ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ। তাইওয়ান ইস্যু হল চীন-মার্কিন সম্পর্কের প্রথম অনতিক্রম্য লাল রেখা। এতে কথায় ও কাজে সম্পূর্ণভাবে এক-চীন নীতি এবং তিনটি চীন-মার্কিন যৌথ বিবৃতি মেনে চলতে হবে। কোনো চ্যালেঞ্জই চীনের অগ্রগতিকে থামাতে পারবে না এবং যে কোনো নিয়ন্ত্রণ ও দমন কেবল অর্থহীন হবে।
চীনা জনগণের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষার দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতাকে কেউই অবমূল্যায়ন করবে না।
শিয়ে ফেং বিশ্বাস করেন যে বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ এবং বৃহত্তম উন্নত দেশ হিসাবে, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার মাধ্যমে অনেক মহান এবং ভালো কিছু অর্জন করা যায়। দু’পক্ষে উচিত সহযোগিতার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করা। শুল্ক যুদ্ধ, বাণিজ্য যুদ্ধ, প্রযুক্তি যুদ্ধ এবং শিল্প যুদ্ধে কোন বিজয়ী নেই। সংরক্ষণবাদ হল পশ্চাদপদতা এবং তা করলে ভবিষ্যত হারিয়ে যাবে। চীন আরো মার্কিন কোম্পানিকে চীনে বিনিয়োগ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্বাগত জানায়, এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদার করার প্রত্যাশায় রয়েছে, যাতে কেবল দুই দেশই নয়, সারা বিশ্বও উপকৃত হবে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইউএস-চীন বিজনেস কাউন্সিলের নৈশভোজ ৭ তারিখে সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের প্রাসঙ্গিক স্থানীয় সরকার ও ব্যবসায়িক চক্রের প্রতিনিধিসহ প্রায় ৪০০ জন লোক অংশগ্রহণ করেন।
সূত্র: স্বর্ণা-হাশিম-লিলি, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।