চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত (মঙ্গলবার) বিকেলে বেইজিংয়ের তিয়াও ইয়ু থাই জাতীয় অথিতি ভবনে চীনে সফররত নেপালের প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা অলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে সি চিন পিং বলেন, চীন ও নেপাল ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো অংশীদার। দু’দেশ সবসময় একে অপরকে সম্মান করেছে, আন্তরিক আচরণ করেছে এবং সমর্থন করেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুস্থ ও স্থিতিশীল উন্নয়ন বজায় রেখেছে। চীন-নেপাল সম্পর্ককে চীনের সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশগুলোর কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রাখা হয়। চীন নেপালের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব সুসংহত করতে এবং চীন-নেপাল উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিমুখী কৌশলগত সহযোগিতা অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও উন্নয়ন করতে ইচ্ছুক।
তিনি আরও বলেন, চীন, নেপালের জাতীয় অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উন্নয়ন পথ বেছে নেওয়াকে সম্মান করে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষার চেষ্টাকে সমর্থন করে। চীন, নেপালের সঙ্গে কৌশলগত আস্থা জোরদার করতে চায় এবং মূল স্বার্থ জড়িত বিষয়গুলোতে পরস্পরকে সমর্থন করবে।
এখন চীন-নেপাল ট্রান্স-হিমালয়ান ত্রি-মাত্রিক আন্তঃসংযোগ নেটওয়ার্কের নির্মাণ বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীন, নেপালের সঙ্গে বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করতে, যৌথভাবে উচ্চমানের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণ করতে, বন্দর, পরিবহন, পাওয়ার গ্রিড, যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রের সংযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করতে চায়। চীন নিজের সামর্ধ্যের মধ্যে নেপালের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক, আর চীনা কোম্পানিগুলোকে নেপালে বিনিয়োগ ও ব্যবসা করতে উৎসাহিত করবে।
২০২৫ সালকে ‘নেপাল পর্যটন বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণাকে চীন সমর্থন করে এবং নেপালি বন্ধুদের ব্যবসা, পর্যটন ও অধ্যয়নের জন্য চীনে আসতে স্বাগত জানায়। চীনও জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামে নেপালের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করতে ইচ্ছুক, যা একসঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করবে।
বৈঠকে অলি বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র নেতৃত্বে চীন অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, চীনের বন্ধু হিসেবে নেপাল উত্সাহিত হয়েছে এবং চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চায়। নেপালকে ‘ভূমিবেষ্টিত দেশ’ থেকে ‘ভূমি-সংযুক্ত দেশে’ রূপান্তর করায় চীনের বিভিন্ন মূল্যবান সহায়তার জন্য কাঠমান্ডু অনেক কৃতজ্ঞ। নেপাল অব্যাহতভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণে অংশ নেবে এবং আরও বেশি চীনা কোম্পানি নেপালে বিনিয়োগ করতে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাস্তব সহযোগিতা করতে স্বাগত জানায়।
তিনি আরও বলেন, নেপাল দৃঢ়ভাবে ‘এক-চীন নীতি’ সমর্থন করে, কিছু দেশের চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হস্তক্ষেপ করার বিরোধিতা করে। চীনের উত্থাপিত বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগসহ একাধিক উদ্যোগ মানবজাতি সঙ্গে জটিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সহায়ক। নেপাল চীনের সঙ্গে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে এবং গ্লোবাল সাউথের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করতে ইচ্ছুক।
সূত্র: তুহিনা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।