পেরুর প্রেসিডেন্ট ডিনা বোলুয়ার্তের আমন্ত্রণে, লিমাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা-এপেকের অর্থনৈতিক নেতাদের ৩১তম সম্মেলনে যোগ দিতে এবং সেদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করতে ১৩ নভেম্বর লিমা গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
হাজার মাইল দূরত্ব থাকলেও চীন ও পেরুর বন্ধুত্বের একটি গভীর জনমতের ভিত্তি রয়েছে। ‘জীবনের সুখ মানে একে অপরকে বোঝা’ প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং একবার এই প্রাচীন উক্তিটি দুই দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন এবং মমতার সাথে পেরুকে ‘প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে’ ‘প্রতিবেশী’ বলেছিলেন।
পেরুর সর্বস্তরের মানুষ অধীর আগ্রহে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সফরের জন্য অপেক্ষা করছেন। পেরুর বন্ধু ফার্নান্দ আলেসা সাংবাদিকদের বলেছেন যে, দেশ দুটি প্রেসিডেন্ট সি’র এবারের সফরকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার করবে বলে প্রত্যাশায় রয়েছেন তিনি।
ফার্নান্দ আলেসা যুবক বয়সে পরিবারের সাথে নয় বছর ধরে চীনে বসবাস করেন। বেইজিং থেকে নানচিং পর্যন্ত চীনের দীর্ঘ ইতিহাস এবং ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি তার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। দেশে ফিরে আসার পর, ফার্নান্দ আলেসা চীনা ভাষা এবং স্প্যানিশ ভাষা অনুবাদের কাজে নিযুক্ত হন। তিনি কেবল তার প্রিয় চীনের থাং রাজবংশের কবিতাই অনুবাদ করেননি, ‘দ্য গ্রেট লার্নিং’ এবং ‘দ্য ডকট্রিন অফ দ্য মিন’ এর মতো কিছু চীনা কনফুসিয়ান ক্লাসিকও অনুবাদ করেছেন। তিনি আশা করেন, এর মাধ্যমে তিনি পেরুভিয়ানদের চীনা সংস্কৃতি বুঝতে সাহায্য করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, চীনা বইগুলো অনুবাদ করার মূল চাবিকাঠি হল তাদের গভীর অর্থ বোঝা, কিন্তু অনুবাদ করার সময় আমি প্রথম যে বিষয়টি বোঝাতে চাই তা হল, তারা যা বলেন তা গভীর অর্থসম্পন্ন।’
ফার্নান্দ আলেসা বলেন, পেরু হল ইনকা সভ্যতার জন্মস্থান এবং চীনের মতো একটি প্রাচীন সভ্যতার দেশ। দুটি দেশ একটি সমুদ্র দ্বারা বিচ্ছিন্ন হলেও বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান সবসময়ই ঘনিষ্ঠ। পেরুতে সর্বত্র দেখা যায় চীনা উপাদান। পেরুভিয়ানরা চীনা সংস্কৃতিতে খুব আগ্রহী, তারা চীনা ভাষা শিখতে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে যান।
তিনি আরো বলেন, পেরুভিয়ানরা চীনা চলচ্চিত্র, চীনা ঐতিহ্যবাহী নাচ এবং চীনা রান্না পছন্দ করেন। চীনের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং প্রাচীন সংস্কৃতি এখনও আধুনিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমি মনে করি, আধুনিক সংস্কৃতি বোঝাই যথেষ্ট নয়, আমাদের সংস্কৃতির শিকড়ের দিকে তাকাতে হবে।
এখন পর্যটক, পণ্ডিত, ব্যবসায়ী, স্বেচ্ছাসেবকসহ আরও বেশি সংখ্যক চীনা মানুষ পেরুতে আসছেন। ফার্নান্দ আলেসা আশা করেন যে, তারা পেরুকে জানবেন এবং বুঝবেন। প্রেসিডেন্ট সি’র এবারের পেরু সফর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা নতুন মানে উন্নীত করবে বলেও প্রত্যাশা তার।
সূত্র: লিলি-হাশিম-তুহিনা,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।