অধ্যাপক খালেদা একরাম ১৯৫০ সালের ৬ই আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস বগুড়া জেলায়। তাঁর মাতা বেগম কামরুন্নাহার ও পিতা এম ই হোসাইন। তাঁরা দুজনেই প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ছিলেন। অধ্যাপক খালেদা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য এবং বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নারী উপাচার্যগণের মধ্যে দ্বিতীয়।
অধ্যাপক খালেদা একরাম ১৯৭৪ সালে স্থাপত্যে ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৮০ সালে ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই থেকে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৯২ সালে তিনি সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে ‘স্থাপত্য ও উন্নয়ন’ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা অর্জন করেন।
অধ্যাপক খালেদা একরাম ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ছিলেন এবং স্থাপত্য পরিকল্পনা অনুষদের ডীন হিসেবেও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে চার বছরের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।
তাঁর শিক্ষা ও কর্মজীবন জুড়ে তিনি আবাসন ও নগরায়ণে সবুজায়ন, নগর পরিকল্পনায় সবুজায়ন এবং নারীদের উন্নয়নে নিবেদিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার ইকুয়ালিটি গ্রুপে কাজ করেছেন। কারিগরি পেশায় নারীদের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের নারী স্থপতি, প্রকৌশলী এবং পরিকল্পনাবিদ সমিতি, বিবি খাদেজা কল্যাণ সংস্থা, কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রথিতযশা শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক খালেদা একরাম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালেই ২০১৬ সালের ২৪শে মে ৬৬ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।
এই মহতী নারী শিক্ষা, সংস্কৃতি, মুক্তচিন্তা ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও দেশ গড়তে যে অসামান্য অবদান রেখেছেন তার স্বীকৃতিস্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে মরণোত্তর ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩’ এ ভূষিত করা হয়।