শিক্ষা প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার। শিক্ষা ছাড়া একটি জাতির উন্নতি কল্পনা করা যায় না। একটি জাতিকে উন্নতির ক্রমবর্ধমান পথে ধাবিত হতে গেলে-চূড়ায় পৌঁছাতে হলে শিক্ষা ছাড়া অন্য কোনো গন্তব্য নেই।
জাতীয় উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হলো মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা। একটি ভালো বীজ থেকেই সম্ভব একটি গাছ মহীরুহ হয়ে ওঠা, তেমনি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা জাতির ভবিষ্যৎ গঠন ও উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
ভালো বীজ থেকেই কেবল ভালো ফল আশা করা যায়। প্রাথমিক শিক্ষা হলো শিক্ষাব্যবস্থার বীজ। বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও মানসিক গুনাবলিসম্পন্ন একজন মানুষের মূল ভিত্তি হলো তার প্রাথমিক শিক্ষা। প্রতিটি শিশু তার জন্মলাভের পর থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তির আগ পর্যন্ত পরিবারের কাছে বিশেষত মা-বাবার ভর্তির আগ পর্যন্ত পরিবারের কাছে বিশেষত মা-বাবার স্নেহ ছায়ায় তার জীবনের মৌলিক বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে শেখে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ শিশুদের সে সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করে। যা তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মানে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
মূলত এটি নির্ভর করে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান, বিদ্যালয়ের পরিবেশ। শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি প্রভৃতির ওপর।
শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হলে শুধু ভালো নম্বর বা গ্রেড পেলে হবে না। পাশাপাশি নৈতিকতা ও আত্মবিশ্বাসের সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। তবে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে সর্বজনীন ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে রয়েছে বিভিন্ন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ শিক্ষাক্ষেত্রে গুনগত পরিবর্তন করে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক মানসম্মত যুগপোযোগী শিক্ষা এবং আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে দক্ষমানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা, শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ভর্তি নীতিমালা বাস্তবায়ন।
যথাসময়ে ক্লাশশুরু, নির্দিষ্ট দিনে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহন ৬০ দিনে ফলপ্রকাশ, সৃজনশীল পদ্ধতি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, স্বচ্ছ গতিশীল শিক্ষা প্রশাসন গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকৃষ্ট করে ঝরে পড়া বন্ধ করা ও শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্কুল ও মাদ্রাসায় সকল ধরনের শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে বই পৌঁছে দিয়ে দেশবাসাীকে বিম্মিত করেছে। এই অভৃতপূর্ব সফলতা সমগ্র জাতির কাছে প্রশংসিত হয়েছে এবং বিশ্বসমাজে পেয়েছে স্বীকৃতি ও মর্যাদা। আজকের কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মানে ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এরাই দেশ পরিচালনা করবে এবং বর্হিবিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। কাজেই শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের জন্য সৎ, দক্ষ দেশপ্রেমিক ও উদার গুনাবলী সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। শিশুদের মনে দেশপ্রেম গড়ে তোলার মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তাদের উজ্জীবিত রাখতে আমাদের সবার দায়িত্ব নিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায় শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তিই রচিত হয় প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে যথার্থ শিক্ষা নিশ্চিতকরনের মাধ্যমে শিশুদের সার্বিক দিক দিয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাতেই এগিয়ে যাবে দেশ। এগিয়ে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ।
লেখক
মোঃ আবুল বাসার
প্রধান শিক্ষক
নাগমুদ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর।