নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দায়েরকৃত মামলা ও গত ৮ এপ্রিল রামগঞ্জ সাতারপাড়া চৌরাস্তায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। এতে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যে দেখা দিয়েছে। উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা দলের জেষ্ঠ নেতাদের ডাকে সব ধরনের আয়োজনেও অংশগ্রহণ করছেন। সরকার বিরোধী আন্দোলন গতিশীল করতে শত শত কর্মী সমর্থকরা ঢাকায় অবস্থান করছেন বলেও জানান বিএনপি দলীয় নেতৃবৃন্দ।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন জানান, চাল-ডাল-তেলসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করন এবং ১০ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অপরাধে এবং বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকে হরতালকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার চালানো হচ্ছে। আন্দোলন গতিহীন করতে রাতের আঁধারের নেতাকর্মীদের বাড়ী বাড়ী হানা দিচ্ছে পুলিশ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা গভীর রাতে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে গ্রামীণ জনপদে।
উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, গত ৫দিনে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির কর্মী ও সমর্থক এবং সন্দেহভাজন ১৫জনকে আটক করেন। আটককৃত ঐসব নেতাকর্মীদের দেখতে থানায় কাউকে দেখা যায়নি। খবর নেয়নি কেউ। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়ী ছাড়া শত শত নেতাকর্মী। দলের সিনিয়র নেতাদের মোবাইল ফোন বন্ধ, আবার কেউ ফোন খোলা রাখলেও ঢাকায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সাংবাদিকদের কাছে।
রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক নজরুল ইসলাম পিন্টু জানান, ঢাকায় বা রামগঞ্জে আহত এবং মামলায় গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের পাশে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মোজাম্মেল হোসেন মজু, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মনোয়ার হোসেন ও এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম আর্থিকভাবে সহযোগিতাসহ তাদের জামিনে মুক্ত করতে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবরসহ বিভিন্ন সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন।
পৌর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মোঃ আশরাফ পাটোয়ারী জানান, হামলা মামলার শিকার নেতাকর্মীদেরকে চারজন আইনজীবির মাধ্যমে সর্বাত্মক সহযোগীতা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের খাবার, পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে নেতাকর্মীসহ সবাইকে উজ্জীবিত করতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আমরা পাশে রয়েছি। যে কোন পরিস্থিতিতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ দলীয় নেতাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে নেতারা একযোগে কাজ করছে।
রামগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা আবুল বাসার সতু জানান, পুলিশ পুরাতন মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। অথছ দেশবাসী বাংলাদেশের সকল জাতীয় পত্রিকা ও টিভি মিডিয়ার মাধ্যমে জানেন চলতি মাসের ৮এপ্রিল বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা নেক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। ঐ রাতেই আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সহ অজ্ঞাত ২৫০জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ঐ মামলার ৬মাস পর এখন আমাদের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের গণগ্রেফতার করছে পুলিশ। এসব মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আমরা সব ধরনের আইনী সহায়তা প্রদান করছি। সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তাদের জামিনে মুক্ত করতে। এছাড়াও আমাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত খবর নিচ্ছি গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের পরিবারের। তাদের ব্যক্তিগত কোন খরচ যেন না হয় সে লক্ষ্যেও নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ এলডিপি মহাসচিব ও ১৮ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমি সবসময় দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম-আছি এবং থাকবো। দলের উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা ঢাকার আন্দোলনে। তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতিনিয়ত খবর নেয়া হচ্ছে, খাবার খরচ-মামলার সকল ব্যয়ভার বহনে দলের নেতারা কাজ করে যাচ্ছেন। বিএনপি একটি বড় দল, নেতাকর্মীদের সংখ্যাও বেশি। ইনশাল্লাহ সকল নেতাকর্মীর জামিন হবে। তাদের পরিবারের জন্যও আমাদের ভালো কিছু করার দৃষ্টি রয়েছে। এ পরিবেশ বেশিদিন থাকবে না। একটু ত্যাগ সবাইকে করতে হবে, কিছুটা ছাড় দেয়ার মানসিকতাও দেখাতে হবে। না হলে এ স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটনা যাবে না।