মাহমুদ ফারুক:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৯নম্বর ভোলাকোট ইউনিয়নের শাকতলা মিজি বাড়ির সামনে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ফারুক মিঝির নামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ৩০ ফুটের অধিক চওড়া খাল দখল করে সরু কালভার্ট নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।
আবদুর রহিম, আবদুর রহমান ও রাজু পাটোয়ারীসহ এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ৩০ ফুট প্রশস্থ এই খালটির মাঝখানে আট ফুট প্রস্থের একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। খালটির দুই পাশ ভরাট করে মাঝখানে কালভার্ট নির্মাণের কারণে খালটি সংকুচিত হওয়াসহ এর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির পানি আটকে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ভোগান্তির শিকার হতে পারেন বলেও দাবী করেন।
বিষয়টি রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও অজ্ঞাত কারনে খালটি দখলমুক্ত করতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার (৬এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোলাকোট যাওয়ার মূল সড়কের ডান পাশের খালটিতে মিজি বাড়ির বাসিন্দা ফারুক মিঝি ও তার আত্মীয়স্বজন বক্স কালভার্ট নির্মান করছে। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। খালটির অধিকাংশ ওয়াল তুলে ভরাট করার প্রক্রিয়া শেষের দিকে।
এলাকাবাসী আরো জানান, ফারুক হোসেন মিঝি নিজ বাড়িতে যাতায়াতের জন্য পরিবহনের সুবিধার্থে তিনি খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণ করছেন। ফারুক মিঝি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। প্রতিবাদ করলেও লাভ হবে না। তাঁর পক্ষে প্রশাসনের সমর্থন রয়েছে।
স্থানীয় ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলু জানান, এ খালের মাঝখানে সরু কালভার্ট নির্মাণ করা হলে পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়াসহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিবে। আমি শুনেছি কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে, তবে দেখিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক হোসেন মিঝি বলেন, এটা আমাদের ব্যক্তি মালিকানা জমিতে খাল। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সকল কাগজপত্র দেখানোর পর তিনি আমাদের কাগজপত্রে কোন সরকারি মালিকানা না থাকায় কালভার্ট নির্মানে অনুমতি দেন।
কিন্ত রামগঞ্জ থানার ওসি সাহেব পুলিশ দিয়ে গতকাল আমাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা পূনরায় ইউএনও সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ওসির সাথে কথা বলার জন্য বলেছেন।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, এ বিষয়ে ফেইসবুকে লেখালেখি দেখে সরেজমিনে গিয়ে মানুষের স্বার্থ এবং সরকারের স্বার্থ রক্ষায় কাজ বন্ধ করেছি। এছাড়াও তিনি কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারলে তিনি কাজ করতে পারবেন অন্যথায় কাজ বন্ধ থাকবে।
জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মিরা বলেন, আসলে এটা সরকারি খালের মতো দেখা গেলেও এটা সরকারি না। কালভার্ট নির্মাতাদের সিএস, আরএস, হালরেকর্ডসহ যত রেকর্ড সব রেকর্ডেই উনার ব্যক্তি মালিকানা। এটা কখনো সরকারি খাল ছিলো না। যেহেতু উনার কালভার্ট নির্মাণ এলাকায় সরকারি কোন বিষয় নাই সেহেতু আমরা এখানে বাধা দিতে পারি না। আর পুলিশ কেন বাধা দিচ্ছে এটা তো পুলিশের বিষয় না। পুলিশ কি কারনে কালভার্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ করেছেন সেটা তারা ভালো বলতে পারবেন।