মাহমুদ ফারুক:
দীর্ঘ চার যুগের রাজনৈতিক পরিচয়। মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও রাজনীতির মাঠে ছিলো সরব উপস্থিতি। স্বাধীনতা যুদ্ধেও ছিলেন সম্মুক্ষ সারির যোদ্ধা। একজন স্কুল শিক্ষক থেকে বহু চড়ায় উৎরাই পার করে হয়েছেন রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের চালিকা শক্তির অন্যতম নেতা। দরবেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন দুই বার। দূর্দিনে দলের জন্য ছিলেন নিবেদিত এক পুরুষ।
বলছি মহান স্বাধীনতার সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা, রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আ.ক.ম রুহুল আমিনের কথা।
৭০ বছর বয়সে বর্ষিয়ান এ রাজনীতিবিদ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) ঢাকার গ্রীন লাইফ হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন। সকল কিছুর উর্ধ্বে ওঠে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ, রাজনীতিবিদ, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক।
জানা যায়, রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম রুহুল আমিন গত মাসখানেক আগে শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে ঢাকার আনোয়ার খান মর্ডাণ মেডিকেল কলেজ হসপিটালে ভর্তি হন। দীর্ঘ সময় পরও শারিরীক অবস্থার উন্নতি না হয়ে মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ঢাকার গ্রীন লাইফ হসপিটালে ভর্তি করান আত্মীয় স্বজনরা। শুক্রবার রাতে ব্রেন টিউমার অপসারনে অপারেশন সফলভাবে করা হয়। শনিবার সকাল থেকে শারিরীক অবস্থার অনেক বেশি অবনতি হয়ে ঐদিন দুপুর দুইটায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান লক্ষ্মীপুর ১ রামগঞ্জ আসনের সাংসদ ড. আনোয়ার হোসেন খানসহ নেতাকর্মীরা। হসপিটালের অভ্যন্তরে আ.ক.ম রুহুল আমিনের লাশ একনজর দেখার জন্য ভীড় করেন শত শত মানুষ।
গ্রীন লাইফ হসপিটাল সংলগ্ন একটি মাঠে প্রথম জানাজার নামাজ শেষে লাশ নিয়ে রামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ছোট ভাই দরবেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
আজ রবিবার সকাল ১০টায় রামগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম ও রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সোলাইমান লাশের কফিনে সালাম প্রদর্শন করেন। এসময় রামগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
জানাজার নামাজে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর পৌর মেয়র মাসুম ভূইয়া, রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ, চাটখীল উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, সাবেক মেয়র মোহাম্মদ উল্যা, রামগঞ্জ পৌর মেয়র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল খায়ের পাটোয়ারী, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বেলাল আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ কমিটির সাবেক নেতা এম. এ মমিন পাটওয়ারী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও জেলা যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু, রামগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সংগঠকসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ জানাজার নামাজের অংশগ্রহণ করেন।
রবিবার বেলা ১১টায় দরবেশপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় ও দুপুর ১২টায় দরবেশপুর গ্রামের ব্যাপারী বাড়ীতে চতুর্থ জানাজার নামাজ শেষে চেয়ারম্যান বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।