নিজস্ব প্রতিবেদক:
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি’র পদযাত্রা ও আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংর্ঘষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ, পথচারী ও দোকানীসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়ী ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সংর্ঘষ চলমান ছিলো।
এদিকে ঘটনাস্থলের ১ কিলোমিটার দুরে মদিন উল্যাহ হাউজিং এলাকার ভিতরে চন্দ্রগঞ্জ থানার দত্তপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজীব (২৫) নামের এক যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হসপিটাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ এ দু’দলের পূর্ব নির্ধারিত পৃথক কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে দলীয় নেতা-কর্মীরা শহরে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন।
বিকেল ৪টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপি’র কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রায় মিছিল নিয়ে বের হন। এসময় শহরের সামাদ একাডেমীর মোড়ে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের ব্যানার পেষ্টুন ছেঁড়া শুরু করে বিএনপির কর্মীরা।
এসময় ২টি অটোরিক্সা ও একটি এ্যাকুরিয়ামের দোকানে হামলা চালায় তারা। এতে দোকানী, পথচারীসহ ৫জন আহত হন।
এদিকে বিএনপির মিছিলটি লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের ডায়াবেটিক হসপিটাল এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ী এলাকায়ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা।
বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে ডায়াবেটিক হসপিটাল সড়ক দিয়ে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল ও কাঁদানী গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের আরো ৪০/৪৫ জন আহত হন।
জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা একযোগে হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের উপরে গুলি বর্ষণ করে। এসময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ হাসান মাহমুদ ইব্রাহিমসহ আহত হয় অর্ধশত নেতাকর্মী। এছাড়া আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা চন্দ্রগঞ্জ থানা যুবদল কর্মী মোঃ সজিব হোসেন (২৫) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের কোন নেতা কর্মীর বক্তব্য নেয়া যায়নি রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।
সদর হসপিটালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন জানান, হসপিটালে অনেক রোগী এসেছে। অনেকের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। বিএনপি’র হামলায় সদরের ওসি মোসলেহ উদ্দিন, সদর সার্কেল সোহেল রানাসহ পুলিশের ১০জন আহত হন বলে জানান তিনি।