নিজস্ব প্রতিবেদক:
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মাহাবুবুল করিম ও প্রধান সহকারী মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন অন্তত ৫০ জন শিক্ষক।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আজিম উদ্দিন ও সম্পাদক ড. আবু সিনা ছৈয়দ তারেক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর অপসারণের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় কলেজের সকল শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষকদের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে অধ্যক্ষ কলেজে আসছেন না। তার অনুপস্থিতে প্রশাসনিক কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কলেজ খোলার প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের খোঁজ করতে থাকেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ ও বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করে।
তারা অধ্যক্ষের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, অনিয়ম, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ, তুচ্ছ কারণে কয়েকজন দরিদ্র কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতকরণ, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্টকরণসহ আরো অভিযোগ উপস্থাপন করে অধ্যক্ষের অপসারণ ও আর্থিক অনিয়মের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
এ ছাড়াও তারা কলেজের প্রধান সহকারী মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার অপসারণ ও শাস্তি দাবি করে। এতে শিক্ষকদের সভায় অভিযোগগুলো নিয়ে উম্মুক্ত আলোচনা হয়। এসময় শিক্ষকদের সঙ্গে অধ্যক্ষ যে সকল অন্যায় অবিচার ও বিমাতাসুলভ আচরণ করেছেন তাও উল্লেখ করা হয়।
সভা চলাকালীন কর্মচারীরা উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর বিভিন্ন অনিয়ম, অসদাচরণসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উপস্থাপন করে তাদের অপসারণ দাবি করেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অধ্যক্ষকে তার পদ থেকে অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি পেশ করা হয়। তার অনিয়মের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রধান সহকারীকে অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত নতুন অধ্যক্ষ পদায়ন করে নিয়মতান্ত্রিক কলেজের পাঠদান ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানায় শিক্ষকরা।
শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আজিম উদ্দিন বলেন, সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে।
প্রধান সহকারী মোরশেদ আলম বলেন, অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে আমিসহ কারোই কোনো কাজ করার সুযোগ ছিল না। উনার নির্দেশেই আমাকে কাজ করতে হতো। উচিত নয়, তবুও নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাধ্য হয়ে আমাকে কাজ করতে হতো। অধ্যক্ষের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার কারণেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, সরকার পরবির্তন হয়েছে। আমাকেও বদলি করে দেবে। এখন অন্য শিক্ষকরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে আমাকে অপমানিত করতে চাচ্ছে। হয়তো শিক্ষকদের মধ্যে কেউ অধ্যক্ষের চেয়ারে বসতে চায়। এতে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু আমাকে অপমান করার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না। আমাকে ছাড়া তারা কিভাবে সভা ডাকে তাও বোধগম্য হচ্ছে না। অনিয়মের ঘটনায় কয়েকজন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছি। আবার কয়েকজনকে চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছি।
সূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ।