নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেষ মুহূর্তে প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ রায়হান। রায়হান রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিকের ছাত্র। গতকাল শনিবার রাতে প্রবেশপত্র হাতে আজ রোববার সকালে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নেয় রায়হান।
সূত্রে জানা যায়, তিন মাস আগে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফরম পূরণের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের এস.এ.সি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল। প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে দেখে তার নামে কোনো প্রবেশপত্র বোর্ড থেকে প্রেরণ করা হয়নি।
ঘটনাটি জানতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে রায়হান।
পরে জানা যায়, তার ফরম কোন কারনে সঠিকভাবে পূরণ করা হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বাধ্য হয়ে রায়হানকে পরের বছর পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কারো কাছে কোন ধরনের সহযোগিতা বা আশ^াস না পেয়ে অপরদিকে পরীক্ষার মাত্র একদিন বাকি ভাবতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রায়হান।
প্রবেশপত্র না পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করে তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া হয়।
শুক্রবার পর্যন্ত তার এস.এস.সি পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পেয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার হুমকি শিরোনামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। নড়েচড়ে বসেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শ্রেণি শিক্ষকগণ ছুটে যান কুমিল্লা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সাথে। কুমিল্লা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিকাল সাড়ে ৪টায় রায়হান হোসেন তার প্রবেশপত্র প্রাপ্তির বিষয়ে নিশ্চিত হন।
রায়হান বলেন, অজ্ঞাত কারনে আমার ফরম পূরণ হয়নি এবং প্রবেশপত্র আসেনি শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। প্রবেশপত্র না পাওয়ায় আমার পরীক্ষা দেয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আমি বাধ্য হয়ে ফেসবুকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্ট্যাটাস দিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ব্যপক সাড়া জাগায়। ঘটনাটি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে আশ^স্ত করেন। এরপর উপজেলা প্রশাসন এবং বিদ্যালয় কতৃপক্ষের সহযোগিতায় পরীক্ষার আগের দিন রাতে আমার প্রবেশপত্র পেয়েছি। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আজকে আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। পরীক্ষা ভালো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শোহরাব হোসেন বলেন, কি কারনে ছেলেটির ফরম পূরন হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়। যাই হোক শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছি। শুকরিয়া।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, ওই ছাত্রের বিষয়টি শোনার পরে আমি বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ডে গিয়ে প্রবেশপত্র নিয়ে আসেন। এমন ভুল যেন না হয় তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।