বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
Logo চীন ও ভিয়েতনাম শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে : সি চিন পিং Logo ক্যান্টন মেলায় বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম Logo মার্কিন শুল্কসহ একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে চীনের বিদেশি বাণিজ্যের দৃঢ়তা Logo চীনের সাথে ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে : ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী Logo চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন স্বার্থে যৌথ কমিউনিস্ট গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে Logo যুক্তরাষ্ট্রের ‘সমতুল্য শুল্ক’ বাতিল করার তাগিদ : চীনা মুখপাত্র Logo চীন আধিপত্য ও একচেটিয়া আচরণের বিরোধিতা করে Logo চীন বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা বজায় রাখতে সমর্থন করবে Logo মার্কিনিরা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ ও ‘আমেরিকা স্পেশাল’ নীতি অনুসরণ করেন : সিএমজি সম্পাদকীয় Logo বোয়াও এশিয়া ফোরাম বিভিন্ন দেশের জন্য পারস্পরিক শিক্ষার একটি মঞ্চ : লাওসের প্রধানমন্ত্রী
নোটিশঃ
যে কোন বিভাগে প্রতি জেলা, থানা/উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘bdpressnews.com ’ জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিক নিয়োগ ২০২৩ চলছে। বিগত ১ বছর ধরে ‘bdpressnews.com’ অনলাইন সংস্করণ পাঠক সমাজে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাঠকের সংখ্যায় প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছে তরুণ, অভিজ্ঞ ও আন্তরিক সংবাদকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ‘bdpressnews.com‘ পত্রিকায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার এ ধাপ

সিচাং : উন্নয়নের এক অলৌকিক ঘটনা

আন্তর্জাতিক: / ৭ Time View
Update : সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ২:১৩ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিচাং সর্বদা মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তবে, অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম ‘রঙিন চশমা’ পরে বিশ্বের কাছে সিচাংয়ের একটি বিকৃত চিত্র তুলে ধরে যাচ্ছে। আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি সত্যিকারের সিচাংকে তুলে ধরবো; জানাবো ভূমিদাসদের মুক্তির পরের দশকগুলোয় এই মালভূমিতে বিশ্ব-কাঁপানো রূপান্তরের কথা।

একসময় সামন্ততান্ত্রিক দাসত্ব ব্যবস্থা সিচাংকে এক অন্ধকার অতল গহ্বরে নিমজ্জিত করেছিল। মাত্র ৫ শতাংশ মন্দিরের কর্মকর্তা, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ও উচ্চ স্তরের সন্ন্যাসীরা দৃঢ়ভাবে প্রায় সমস্ত জমি, চারণভূমি ও বন নিয়ন্ত্রণ করতেন। ৯৫ শতাংশ ভূমিদাস ও দাসদের শুধু কিছুই ছিল না, তা নয়, বরং তাঁদেরকে সবচেয়ে মৌলিক ব্যক্তি-স্বাধীনতা থেকেও বঞ্চিত করা হতো। তাদের সাথে বস্তুর মতো আচরণ করা হতো; তাদেরকে চোখ উপড়ে ফেলা ও নাক কেটে ফেলার মতো নিষ্ঠুর শাস্তি দেওয়া হতো। পুরাতন সিচাং ছিল এক জীবন্ত নরক।
১৯৫৯ সালের ২৮শে মার্চ, চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ তত্কালীন সিচাং স্থানীয় সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেয়, যা গণতান্ত্রিক সংস্কারের সূচনা করে। লক্ষ লক্ষ ভূমিদাসকে নতুন জীবন দেওয়া হয় এবং সিচাং একটি উজ্জ্বল নতুন যাত্রা শুরু করে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিচাং আশ্চর্যজনক সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে সিচাংয়ের জিডিপি ছিল ২৭৬.৪৯৪ বিলিয়ন ইউয়ান আরএমবি; প্রবৃদ্ধির হার জাতীয় গড় হারের চেয়ে বেশি। ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, সিচাংয়ের জিডিপি প্রতি বছর গড়ে ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর মাথাপিছু জিডিপি ৩২ হাজার ইউয়ান থেকে বেড়ে ৫৮ হাজার ইউয়ানে পৌঁছেছে। সিচাংয়ে সড়ক, রেলপথ ও বিমান চলাচলের একটি ত্রিমাত্রিক পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত মহাসড়কের মোট মাইলেজ ১.২ লাখ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। ৯৯ শতাংশ থানা ও ৯৮ শতাংশ গ্রামে সড়ক চালু হয়েছে। পাঁচটি বেসামরিক বিমানবন্দরে ১৫০টিরও বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুট চালু হয়েছে। লাসা গঙ্গার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বার্ষিক যাত্রী পরিবহন ৫০ লাখ পার্সনটাইমস ছাড়িয়েছে। সিছুয়ান-সিচাং সড়ক নির্মাণের পর সিচাং ও মূল ভূখণ্ডের মধ্যে সংযোগব্যবস্থা আরও জোরদার হবে।

কৃষিক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অতীতে সিচাংয়ের কৃষি উত্পাদনপদ্ধতি অত্যন্ত আদিম প্রকৃতির ছিল; শস্য উত্পাদন কম ছিল এবং গবাদি পশুর বেঁচে থাকার হার ছিল কম। বর্তমানে সিচাংয়ের কৃষি যান্ত্রিকীকরণের হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। মাঠের সর্বত্র ট্রাক্টর, ফসল কাটার যন্ত্র, ইত্যাদি দেখা যায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ উচ্চভূমির বার্লির ফলন ক্রমাগত বৃদ্ধি করেছে। ২০২৪ সালে সিচাংয়ের উচ্চভূমির বার্লি উত্পাদন ৮.৮৮ লাখ টনে পৌঁছায়, যা একটি নতুন রেকর্ড। সিচাংয়ের বৈশিষ্ট্যময় কৃষি ও পশুপালন শিল্প দ্রুত উন্নত হচ্ছে। যেমন, শিগাটসের বেইলাং জেলায় অবস্থিত সবজি গ্রিনহাউস শিল্প কেবল স্থানীয় চাহিদাই পূরণ করে না, বরং আশেপাশের এলাকায়ও পণ্য বিক্রি করে।

সিচাংয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ক্রমশ উন্নত হয়েছে। পুরাতন সিচাংয়ে অধিকাংশ ভূমিদাসের শিক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ ছিল না। বর্তমান সিচাংয়ে প্রাক-বিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। ‌২০২৪ সালে সিচাং প্রাক-বিদ্যালয় শিশুদের মোট ভর্তির হার ছিল ৯৭.৮৬ শতাংশ। নয় বছর মেয়াদী বাধ্যতামূলক শিক্ষার একত্রীকরণের হার ৯৯ শতাংশে পৌঁছেছে।

সিচাংয়ে চাং ভাষা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্কুলগুলোয় চাং ভাষার ক্লাস দেওয়া হয় এবং সরকারি নথিপত্র ও পাবলিক সুবিধার সাইনবোর্ডগুলো বেশিরভাগই চাং ও হান ভাষায় লেখা থাকে। পোতালা প্রাসাদ, জোখাং মন্দিরসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো ব্যাপকভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। চাং অপেরা ও থাংকার মতো ১২৫টি জাতীয় অস্পষ্ট সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সিচাং আজ দাসত্ব ব্যবস্থার অধীনে দারিদ্র্য ও পশ্চাদপদতা থেকে সমৃদ্ধিতে পৌঁছেছে। এটি এমন একটি সত্য যা সকলের কাছে স্পষ্ট। আশা করা যায় সবাই কুসংস্কার ত্যাগ করবেন, নিজেরাই আসল সিচাংকে অনুভব করবেন এবং এর বিশেষ আকর্ষণ ও সীমাহীন উন্নয়নের প্রাণশক্তি এসে দেখে যাবেন।

সূত্র : ছাই-আলিম-আকাশ, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Design & Developed by : BD IT HOST