নতুন বছরের শুরুতে, চীনের ৪০তম অ্যান্টার্কটিক অভিযাত্রী দল একটি ব্যস্ত বৈজ্ঞানিক অভিযানের সময়ে প্রবেশ করে। বর্তমানে, “সুয়েই লং ২” আমুন্ডসেন সাগরে সমুদ্র পর্যবেক্ষণ করে এবং চীনের পঞ্চম অ্যান্টার্কটিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের নতুন স্টেশনের নির্মাণকাজও অব্যাহত থাকে। “সুয়েই লং ২”-এর বরফ ভাঙার দুর্দান্ত ক্ষমতা হোক বা কঠোর পরিবেশে নির্মিত রস সি স্টেশন—সবকিছুতেই হার্ড-কোর সরঞ্জাম প্রয়োজন হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীনের জাহাজ-নির্মাণসহ সামুদ্রিক সরঞ্জাম শিল্প ব্যাপক উন্নত হয়েছে এবং মহাসাগরীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা আরও গভীর ও আরও প্রসারিত হয়েছে। গতকাল (সোমবার), চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, দেশের জাহাজ-নির্মাণ শিল্পের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করে। ২০২৩ সালে, চীনের জাহাজ-নির্মাণ শিল্পের তিনটি প্রধান সূচক ছিল বিশ্বের শীর্ষে। এ নিয়ে টানা ১৪ বছর ধরে এ স্থানটি ধরে রেখেছে চীন।
বর্তমানে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজ “সুয়েই লং ২”, যা দক্ষিণ ও উত্তর মেরুতে সাতটি অভিযানে অংশ নিয়েছে, আমুন্ডসেন সাগরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। “সুয়েই লং ২” এমন একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজ, যার দ্বি-মুখী বরফ ভাঙার ক্ষমতা রয়েছে। এর দ্বি-মুখী বরফ ভাঙার ক্ষমতা এটিকে ১.৫ মিটার পুরানো বরফের মধ্যে দুই থেকে তিন নট গতিতে অবাধে চলাচল করতে দেয়। এটি ২.৫ মিটার পুরু বরফ ভেঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে পারে।
মানুষের সমুদ্রে অন্বেষণ কখনও থামেনি। সকল বৈজ্ঞানিক অভিযানের কার্যক্রমকে অবশ্যই বিভিন্ন উন্নত ও নির্ভরযোগ্য সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা সরঞ্জামের ওপর নির্ভর করতে হয়। এর মধ্যে সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চীনে বর্তমানে তিন ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজ রয়েছে: সামুদ্রিক, পেশাদার, ও বিশেষ। এর মধ্যে পেশাদার বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজের মধ্যে রয়েছে পৃথিবী গবেষণা জাহাজ, হাইড্রোঅ্যাকোস্টিক জরিপ জাহাজ, মৎস্য গবেষণা জাহাজ, ভূতাত্ত্বিক জরিপ জাহাজ, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ জাহাজ ইত্যাদি; বিশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজের মধ্যে রয়েছে মেরু বৈজ্ঞানিক গবেষণা আইসব্রেকার জাহাজ, মহাসাগর ড্রিলিং রিসার্চ জাহাজ, সমুদ্র খনন গবেষণা জাহাজ, সরঞ্জাম পরীক্ষা জাহাজ, ইত্যাদি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীনের সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজগুলো ক্রমাগত বিকাশ লাভ করেছে। একদিকে জাহাজের আকার আরও বড় হয়েছে, অন্যদিকে এগুলো সমুদ্রের আরও গভীরে এবং পৃথিবীর মেরুতে প্রবেশ করছে। কিছুদিন আগে, চীনের স্বাধীনভাবে ডিজাইন করা ও নির্মিত নতুন প্রজন্মের আইসব্রেকিং বৈজ্ঞানিক গবেষণা জাহাজ–“পোলার”, আনডক ও চালু করা হয়। নতুন বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ শুরু করবে এটি। গত বছরের শেষে, চীনের প্রথম স্বাধীনভাবে বিকশিত অতি-গভীর জলের সমুদ্র তুরপুন জাহাজ “ড্রিম” চীনের কুয়াংচৌয়ের নানশা থেকে রওনা দেয়। এর প্রথম ট্রায়াল মিশন শেষ হয়েছে।
জাহাজ নির্মাণ শিল্প একটি আধুনিক শিল্প। এটি শুধুমাত্র আধুনিক বড় শিল্পেরই প্রতীক নয়, এটি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় প্রতিরক্ষা নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত একটি কৌশলগত শিল্পও বটে। দেশের সামুদ্রিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা, সামুদ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, কৌশলগত পরিবহন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জাতীয় অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য জাহাজ নির্মাণ শিল্পের অর্জনগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
সূত্র: জিনিয়া, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।