মাহমুদ ফারুক:
আওয়ামীলীগের রাজনীতি করার পরও একের পর এক মামলার আসামি হতে হয়েছে, ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে, দল থেকে বহিস্কারের ঘটনা ঘটেছে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়। তাই অভিমানে দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর ইছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম ফারুক।
যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি তার একটি স্ট্যাটাসে শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকার কথা উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন।
সোমবার ১৫ মে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজে দলীয় প্যাডে ও টাইপযুক্ত একটি চিঠি পোষ্ট করেন। তবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সফিক মাহমুদ পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমিন এ ব্যপারে কোন আবেদন পাননি বলে জানান।
বর্তমানে শামসুল ইসলাম ফারুক (এস.আই ফারুক) ফ্রান্সে রয়েছেন।
এস.আই ফারুক অব্যাহতির ঘটনা সত্য জানিয়ে তিনি বলেন অব্যাহতিপত্রের অনুলিপি কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
এসআই ফারুক আরো বলেন, ৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের ক্ষমতাকালীন ৯টি ও ২০০১-০৭ সনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ৭টি মামলার আসামি হয়েছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতি সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় একাধিকবার জেল খাটতে হয়েছে। দুর্দিনে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছি। এখন আওয়ামীলীগের সুসময়। এসময় এসে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৫টি মামলায় আমাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামীলীগ করায় মামলায় আমাকে আসামি হতে হবে এটি কখনো কল্পনা করিনি।
বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সজিব হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। এ মামলায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ খাঁনকেও আসামী করা হয়েছে।
এস আই ফারুক আরো বলেন, আওয়ামী লীগ করায় মামলায় আসামি হতে হবে এটি কখনো কল্পনা করিনি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা পদ-পদবীও হারিয়েছি।
এস আই ফারক অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করেন, শারীরিক জটিলতা ও ব্যক্তিগত কর্ম ব্যস্ততার কারণে রাজনৈতিক মাঠে অনুপস্থিতিতে দলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এতে দলের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি ইছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ ও দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন।
রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সফিক মাহমুদ পিন্টু বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি। এখনো কোন চিঠি পাইনি। আগে চিঠি পাই, তারপর দেখা যাক কি করা যায়।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমিন জানান, আমরা কোন চিঠি গত ৫দিনেও পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর জানা যাবে কি কারনে তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন। তবে তিনি জানান, অন্যদের মতো আমিও ফেসবুক পোষ্টে দেখেছি তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন। তার সাথে কথা বলাও সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, এসআই ফারুক ১৯৯১ সালে শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৩-৯৫ সালে ছাত্রলীগ থেকে রামগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। তখন তিনি হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। এরপর দু’মেয়াদে তিনি ইছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৩ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের সহকারী পরিচালক সমিতির টানা তিন বারের সভাপতি হিসাবে দায়িত্বে রয়েছেন।