মশিউর আনন্দ, ঢাকা:
সকালে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে (১, কারওয়ান বাজার, টিসিবি ভবন-৮ম তলা) গরম মসলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীগণের সাথে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্ণিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, ক্যাবের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
উল্লেখ্য, মতবিনিময় সভাটি অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।সভায় আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে গরম মসলার সরবরাহ ও মূল্য যেন স্থিতিশীল থাকে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের মূল্য তালিকা না দেয়া, ক্রয়ের ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ না করা, বিক্রয়ের ক্যাশমেমো না দেওয়া এবং দিলেও কার্বন কপি সংরক্ষণ না করা, আমদানি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র না থাকা, পাইকারি মূল্য খুচরা মূল্যের সামঞ্জস্য না থাকা, খাদ্যপণ্যে শিল্পে ব্যবহৃত রং/টেক্সটাইল কালার ব্যবহার করা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রাক বাজেটের পূর্বে সেক্টরভিত্তিক সংশ্লিষ্টদের সাথে যেন সভা করা হয়, সে বিষয়ে NBR-কে পত্র প্রেরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় মসলার বাজার অস্থিতিশীল ও সরবরাহ সংকট হওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান এলসি খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা, ডলার এর মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় মহাপরিচালক বলেন, আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সকলের সাথে সমন্বয় করে নিবিড়ভাবে বাজার অভিযান পরিচালনা জোরদার করা হবে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে যে জায়গায় জটিলতা হচ্ছে তা অধিদপ্তরকে জানালে অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে বিষয়টি আনবে।
তিনি বলেন, পণ্য মজুদ রেখে বাজার অস্থিতিশীল করা হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর কঠোর ব্যবস্থা নিবে। প্রতিটি বাজার কমিটিকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য তালিকা প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বাজারে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হবে না, সেক্ষেত্রে অধিদপ্তর উক্ত বাজার কমিটিকে বিলুপ্ত করার বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করবে। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের পবিত্র রমজানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য অস্থিতিশীল করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি ব্যবসায়ীগণকে সকল আইন মেনে ব্যবসা করা, সরকার নির্ধারিত মূল্যে ভোক্তাদের নিকট পণ্য বিক্রয় করা, ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার দোকানে সংরক্ষণ করা ও পণ্যে ভেজাল না মেশানোর বিষয়ে আহবান জানান।
তিনি সভায় অংশগ্রহণকারীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি আরো বলেন সভায় গরম মসলার মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে যে সকল সাজেশন এসেছে তা সুপারিশসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।
আলোচনা শেষে মহাপরিচালক আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে মসলাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যেন বৃদ্ধি না পায় সে বিষয়ে সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি সভা শেষে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকে অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম প্রচারে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।