স্হানীয় দুই অধিবেশনের শেষে, চীনের প্রথম-স্তরের অর্থনৈতিক কেন্দ্রে ২০২৩ সালে জিডিপি ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে। এমন ২৬টি শহর এ বছর তাদের বার্ষিক জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা এক স্তর বাড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এসব শহর সাধারণত তাদের নিজ নিজ প্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করে এবং তাদের ইতিবাচক ব্যবস্থাগুলি প্রদেশের অন্যান্য শহরে এ বছর কঠোরভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে উৎসাহিত করে।
প্রদেশগুলি ইতিবাচকভাবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার পরে উপাত্তে দেখা যায়, ২০২৪ সালে বেশিরভাগ শহরের জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫ শতাংশ বা তার উপরে নির্ধারণ করা হয়।
তারা উল্লেখ করেছে যে, পশ্চিমা মিডিয়ার অপপ্রচার সত্ত্বেও, চীন এখনও বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী প্রধান অর্থনীতিগুলির মধ্যে একটি এবং চীনের এ বছর প্রায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধির হার অর্জন করা সম্ভব।
উআইইসিএআই ডটকম ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে চীনের জিডিপির ৪০ শতাংশের পেছনে ২৬টি শহরের অর্জন রয়েছে। একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এসব শহর ২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সক্রিয় প্রচার করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ছংছিং এবং মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান সহ মোট ১০টি শহর ৬ শতাংশ বা তার বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে; যখন কেন্দ্রীয় হ্যনান প্রদেশের রাজধানী চেংচৌ ৭ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে এটি ২৬টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য।
১৩টি শহর তাদের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩ সালের তুলনায় দ্রুত গতিতে অর্জন নির্ধারণ করেছে এবং এর মধ্যে ১২টি শহর ৫ শতাংশের উপরে বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
ডংগুয়ান, দক্ষিণ চীনের গুয়াংতুং প্রদেশের একটি রপ্তানি ও উৎপাদন কেন্দ্র; যার অর্থনীতি গত বছর ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মহামারীর প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার করছে। পাশাপাশি শহরটি বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সাথে সামঞ্জস্য করেছে। এ বছর ৫ শতাংশের লক্ষ্যসহ দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের চায়না ওপেন ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লি ছাংআন গত বুধবার গ্লোবাল টাইমসকে বলেন যে, কিছু মূল শহর উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করছে, যাতে দেখা যায় যে তারা বিশ্বাস করে, যতক্ষণ সঠিক নীতি আছে, এটা অনুমান করা হয় যে বাজার সত্ত্বার জীবনীশক্তি সম্পূর্ণরূপে প্রদর্শিত হবে, তাদের দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে।
এই উচ্চতর লক্ষ্যগুলি অন্যান্য শহরগুলিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তাদের উৎপাদন, বিনিয়োগ এবং ব্যবহারে তাদের প্রচেষ্টা আরও এগিয়ে নেবে, জাতীয় অর্থনীতিতে এগিয়ে নেওয়ার ভিত্তি স্থাপন করবে।
বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেন যে, প্রচুর নতুন উৎপাদনশীলতা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র, যেমন নতুন শক্তির যানবাহন এবং অন্যান্য শিল্পগুলি দ্রুত বিকাশ হচ্ছে।
উচ্চাভিলাষী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করার সময়, চীন অর্থনীতিকে প্রয়োজনীয় উৎসাহ দেওয়ার জন্য আরও সহায়ক নীতি বাস্তবায়ন করছে।
২০২৩ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ৫.২ শতাংশ দৃঢ় প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করার পরে উচ্চতর পর্যায়ে গাড়ি বিক্রি, গত শীতে শুরু হওয়া পর্যটন খাতের বৃদ্ধি এবং বসন্ত উত্সবের ছুটিতে শক্তিশালী খরচের কারণে চীনের অর্থনীতি ভালো ফলাফল অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যেহেতু অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নিজস্ব চালিকাশক্তি ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে এবং রূপান্তর ও উন্নয়ন দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেহেতু, ২০২৪ সালে ইতিবাচক অর্থনৈতিক কারণগুলির সম্মিলিতভাবে নেতিবাচক প্রভাবকে হ্রাস করবে। এর মানে হল যদি বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়, চীনা অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।
গত বুধবার এক নিউজ পোর্টাল প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয় যে, চীনের রেনমিন ইউনিভার্সিটির ছংইয়াং ইনস্টিটিউট ফর ফাইন্যান্সিয়াল স্টাডিজের একজন সিনিয়র গবেষক জন রস উল্লেখ করেন যে, চীনের অর্থনীতি প্রধান পশ্চিমা অর্থনীতির তুলনায় অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ইঙ্গিত করে যে, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রধান পশ্চিমা অর্থনীতির তুলনায় ধীরগতির- এ মন্তব্য ভুল এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিন্তু রস উল্লেখ করেছেন যে, দুর্বল শিল্পে মুনাফা অর্জন করা প্রয়োজন।
২০২৪ সালে সামগ্রিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য মার্চ মাসে বার্ষিক দুই অধিবেশনে ঘোষণা করা হবে। সূত্র : চায়না মিডিয়া গ্রুপ।