মাটি, মানুষ আর মানবতা নিয়েই যার চিন্তা, চেতনা, ভাবনা। ডা. বতুল রহমান পেশায় একজন চিকিৎসক। রাজবাড়ী জেলার জৌকুড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম হয়। বাবার চাকুরিসূত্রে শহরে বেড়ে উঠলেও ছোটোকাল থেকেই গ্রাম, গ্রামের মানুষ তার ভীষণ পছন্দের, অতি আপন। গ্রামের মেঠো পথ ধরে হেঁটে যাওয়া, বনে, জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গাছ- লতার সাথে মিতালি করা, পুকুরে ঝাঁপানো, সাঁতার কাটা, মাছ ধরা, গাছে উঠা, ঘুড়ি উড়ানো, এসব তার ভীষণ পছন্দের। গ্রামবাংলার সোঁদা গন্ধ আর গ্রামের মানুষেরা তার আত্মার সাথে মিশে আছে। সেই ছোটোকাল থেকেই সাহিত্য অঙ্গনে তার বিচরণ। বিশেষ করে ষষ্ঠ/সপ্তম ক্লাস থেকে পত্রমিতালি করে বন্ধুদের সাথে বিভিন্নভাবে লেখার বিনিময় করতেন।
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন। কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটো গল্প রচনা, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন। স্কুল, কলেজে বিভিন্ন দেয়ালিকা, ম্যগাজিন, পত্রিকায় তার লিখা প্রকাশিত হয়েছে। যদিও তিনি প্রচার, প্রকাশনায় প্রচণ্ড উদসীন। মনের খেয়ালে লেখালিখি করেন। গান শোনা, কবিতা পাঠ, বই পড়া তার সখ।
পরবর্তীতে তার প্রধান উদ্দেশ্য বাংলাদেশের বৈচিত্রময় সংস্কৃতি বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ও তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা। তিনি আর্তমানবতার সেবায় সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। সেই আত্মশুদ্ধি থেকেই প্রাণপ্রিয় বাবার নামে নিজ গ্রামে ‘মোজাহার হোসেন ফাউন্ডেশন’ নামে একটা অরাজনৈতিক, অলাভজনক, সেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান তিলতিল করে গড়ে তুলেন। এর কার্যক্রমকে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়া নেশা থেকে এখন গুরু দায়িত্ববোধে পরিণত হয়েছে।
গ্রামে গড়ে তুলেছেন একটি দাতব্য চিকিৎসালয়। সব ধরনের চিকিৎসা সহ অন্ধত্ব দূরীকরণে চোখের ছানি পড়া বা জটিল সমস্যায় রোগীদের বিনামূল্যে অপারেশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন এবং তাদেরকে পৃথিবীর আলো দেখানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, যা আশপাশে প্রভূত সাড়া জাগিয়েছে।
বিরহী বসন্ত
আমি অপেক্ষা করব,
এক বসন্তের আঙিনায় দক্ষিণা জানালায়, ঝিরিঝিরি উদাসী সমীরণে,
যেথায় আমায় ছুঁয়ে দিবে তুমিতে।
আমি অপেক্ষা করব।
জ্যোৎনাস্নাত রাতে একেলা এ
লোকেশী বিরহিণী
যেখানে বাজবে বসন্তের নূপুর
তোমার পদধ্বনিতে।
আমি অপেক্ষাতে রবো
তোমার জন্যে সেইখানে,
যেইখানে আকাশ ছুঁয়েছে সাগরকে,
পৃথিবীর আদি বিস্ময় আঙিনা
দেখব অবাক হয়ে
কেমন করে
সাগর থেকে মহাসাগরের অতল গভীরতায়, লুকিয়েছে এক ফোঁটা জলকণা।
আমি প্রতীক্ষাতে রবো
এক অনুভবের,
অপার মহিমাময় রহস্যময়তা,
এক মহাসাগর সৃষ্টি করতে পারার অনুপ্রেরণা।
আমি অপেক্ষা করব,
এক বিরহের,
যে বিরহের প্রশান্তি তোমাকে নিয়ে ভাবায়, অপেক্ষার প্রহরগুলো সুখে ভাসায়,
আমায় নীল আকাশে
উপেক্ষা শুধু সময়কে আর,
বিমগ্ন বিরহী বসন্ত বন্দনা।