নিজস্ব প্রতিবেদক: রামগঞ্জে গভীর রাতে দীর্ঘদিনের চলাচলের কাঠের ব্রীজ ভেঙ্গে দোকানঘর নির্মান করেছে একদল দূর্বৃত্ত।
শুক্রবার গভীর রাতে রামগঞ্জ পৌর শহরের সাতারপাড়া এলাকার কলাবাগান-রতনপুর সংযোগ স্থলের কাঠের ব্রীজ ভেঙ্গে রাতারাতি দোকান ঘর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন ওরফে কতিথ দেলু এসপির বিরুদ্ধে।
রাত প্রায় ১টার দিকে ব্রীজ ভাঙার বিকট শব্দে স্থানীয় বাসাবাড়ীর বাসিন্দাদের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। এসময় এলাকাবাসী ডাকাত আতঙ্কে চিৎকার দিলে দূর্বৃত্তরা বাসাবাড়ীর বাসিন্দাদের দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন বলেও জানান স্থানীয় লোকজন।
ব্রীজ ভেঙ্গে দোকান নির্মান করে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় ঐ এলাকার শত শত স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ এলাকার কয়েকহাজার মানুষ পড়েন চরম দূর্ভোগে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, একটি মাত্র ব্রীজের অভাবে রামগঞ্জ কলাবাগান, সাতারপাড়া, নন্দনপুর, সোনাপুর, মৌলভী বাজার, কাঠ বাজার, রামগঞ্জ মডেল কলেজ, রামগঞ্জ রাব্বানীয়া কামিল মাদ্রাসা, রামগঞ্জ সরকারী কলেজসহ কলাবাগান সড়কের পশ্চিম পাশের ষ্টেশন মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামগঞ্জ এম ইউ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে উক্ত স্থানে কাঠের পাটাতন দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে একটি ব্রীজ নির্মান করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এদিকে আগে থেকে উক্ত ঘাঁটলার জায়গাটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু এসপি। বার বার চেষ্টা করা হয় ঘাঁটলার জায়গায় দখলে নিয়ে দোকানঘর নির্মানের। ২০১৬ইং সনে সন্ত্রাসী কায়দায় দোকান নির্মানের চেষ্টা করা হলে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হন তিনি।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন ঘাঁটলার উপরে নির্মিত কাঠের ব্রীজের জমি জেলা পরিষদ থেকে লীজ (বন্দোবস্ত) আনার কথা বলে শুক্রবার দিনগত (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত প্রায় ১টার দিকে ৫০/৬০জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে শত শত মানুষের দূর্ভোগের কথা না ভেবে দীর্ঘদিন চলাচলের এই কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে দোকানঘর নির্মান করেন।
এলাকাবাসী জানান, কলাবাগান ব্যাংক সড়কের উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (বিআরডিবি)র মালিকানা জমির পশ্চিম পাশে বিরেন্দ্র খালের উপর ৪০ বছর পুর্বে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত পরিত্যক্ত ঘাটলার স্থলে ব্রীজ নির্মানের দাবী দীর্ঘদিনের।
একটি ব্রীজের অভাবে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হতো এলাকাবাসীকে। ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ২০২৩ইং সনে উক্ত ঘাঁটলার উপরে বাঁশ ও কাঠের পাটাতন দিয়ে একটি ব্রীজ নির্মান করেন তারা। যাতায়াতে দূর্ভোগ লাঘব হয় কয়েক হাজার লোকজনের। কিন্তু রাত ১টায় ৫০/৬০জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ নিয়ে কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে দোকান নির্মান করেন কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন।
এলাকাবাসী আরো জানান, ঘাঁটলার উপরের ব্রীজ ভেঙ্গে দোকান ঘর নির্মানে অভিযুক্ত কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু জানান, আমি উক্ত ঘাটলার জায়গাটি ২০১৫ইং সনে বন্দোবস্ত নিয়ে খাঁজনা পরিশোধ করে আসছি। আমি আমার জায়গা দখলমুক্ত করেছি। তবে রাতের অন্ধকারে এভাবে ব্রীজ ভেঙ্গে দোকান ঘর নির্মান বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল ইকবাল জানান, আমি ঘটনাটি জানিনা। আমি আগামীকাল (রবিবার) সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে অবশ্যই জনদূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিধিমতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার জানান, আমি খবর নিয়ে জেনেছি এখানে দুইটি গ্রুপের বিবাদ রয়েছে। আমরা সরেজমিনে তদন্ত করবো। যেখানে শত শত মানুষের স্বার্থ রয়েছে, আমরা সেভাবেই কাজ করবো। যাতে মানুষ কোন ধরনের দূর্ভোগের শিকার না হয়।