মাহমুদ ফারুক:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মোঃ কামাল হোসেন বিল্লাল নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সিনিয়র শিক্ষককে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে হসপিটালে পাঠিয়েছেন একই বিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতি একেএম ফারুক।
আজ বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের মধ্য মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
পরে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল মাছিমপুর গ্রামের তৈয়ারী বাড়ির মৃত ফজলুল হকের ছেলে ও বিদ্যালয়ের সভাপতি একেএম ফারুক একই গ্রামের আইচের বাড়ির মৃত মোহাম্মদ উল্লার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্য মাছিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয়ের আসেন। এর পরেই সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একেএম ফারুক অফিস কক্ষে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের সামনে শিক্ষক রুমের টেবিল থেকে স্কেল নিয়ে সিনিয়র শিক্ষক কামাল উদ্দিনকে পিটিয়ে রক্তাত্ব জখম করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ ব্যপারে শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রায়ই আমাদের সাথে খারাপ আচরন করেন। আজ সকালে আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি না করিয়ে পাশ^বর্তি মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এসময় আমি মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের ক্লাশ খুব একটা ভালো হয় না বলার সাথে সাথে টেবিলের উপর থেকে স্কেল নিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেন। এত দ্রুত ঘটনাটি ঘটেছে, আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই উনি স্কুল থেকে চলে যান। আমি বর্তমানে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ কে এম ফারুক জানান, এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এজন্য আমি অনুতপ্ত। আমিতো মানুষ, ফেরেশতা নই। ভুল হতেই পারে। ঘটনার পর পরই বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষক বিল্লালের বাড়িতে গিয়েছি। কিন্তু কাউকে পাইনি। দয়া করে আপনারা বিষয়টি সমাধান করে দিন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে লেখালেখির দরকার নেই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, গত দুই বছর আগেও একেএম ফারুক একজন শিক্ষককে মাছিমপুর বাংলাবাজারে হাঁটবারের দিন প্রকাশ্যে লাঞ্চিত করেন। পরে ক্ষমা চেয়ে পার পান।
স্কুল প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই ঘটনাটি ঘটে গেলো। পরে আমিসহ অন্য শিক্ষকরা মিলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। এভাবে একজন শিক্ষকের উপর হামলা দুঃখজনক।
রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে আমরা সকল কর্মকর্তা হাসপাতালে গিয়েছি। শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।