অনুবাদ: জিনিয়া:
মেরিসা, একজন রাশিয়ান মেয়ে, বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটিতে চীনাভাষা আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষের স্নাতক ছাত্রী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চীনে বাস করেন নি। তবে, তিনি সাবলীল চীনা ভাষায় কথা বলতে পারেন। সুবিধাজনক জীবন, সমৃদ্ধ খাবার ও কমনীয় চীনা সংস্কৃতির কারণে মেরিসা চীনকে খুব পছন্দ করেন।
মেরিসা খুব দ্রুত চীনা ভাষায় কথা বলেন, যা তার ভালো চীনা দক্ষতা প্রকাশ করে।
প্রকৃতপক্ষে, এটি তার চীনা ভাষা শেখার ষষ্ঠ বছর। নোভোসিবিরস্ক থেকে এসেছেন মেরিসা, তিনি ভাষায় বেশ দক্ষ।
প্রতিবেদককে তিনি বলেন, চীনা ভাষা শেখা তার মেধা বিকাশের আরও সুযোগ নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, “মেজর বিবেচনায় তিনি তার অবস্থা এবং নানা বিষয় বিবেচনা করেছেন। রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। চীনা ভাষা শেখা আমার ভবিষ্যতের জন্য কল্যাণকর।”
মেরিসা চীনা ভাষা শেখা শুরু করার পর, তিনি সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন: কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত কার্যক্রম থেকে শুরু ২০২০ সালে, মেরিসা রাশিয়ায় ১৯তম “চীনা সেতু” প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি প্রতিযোগিতায় জয়ী হন এবং চীনে পড়াশোনা করার বৃত্তি পান। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এক বছর অনলাইন ক্লাস করার পর, মেরিসা অবশেষে চীনে আসেন। তিনি বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ওঠেন। মেরিসা বলেন, “ক্যাম্পাস জীবন আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। এখানে অনেক ছাত্র-ছাত্রী দিনে পড়াশোনা করে এবং রাতে বাইরে যায়। আমি প্রায়ই দেখি কিছু ছাত্র-ছাত্রী স্কোয়ারে নাচছে, আর কিছু ছাত্র ব্যাডমিন্টন ও বাস্কেটবল খেলছে… ক্রীড়া হল একটা উপায় যা তরুণ-তরুণীর মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি করে, ক্যাম্পাস একটি বন্ধুত্বপূর্ণ জায়গা।”
চীনের মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, মেরিসাও ক্যাম্পাসের বাইরে যাওয়া শুরু করেন এবং বেইজিং ও অন্যান্য শহরে ভ্রমণ করা শুরু করেন। তার প্রিয় জিনিস হল ভিন্ন জায়গার সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নেন। তিনি বলেন, আগে চীনাভাষার টিভি সিরিজ দেখেছেন এবং চীনের বিনোদন বিষয়ক অনুষ্ঠানও দেখেছেন, তিনি মনে করেন যে সেগুলির মাধ্যমে চীনের জীবন সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যায়। কিন্তু চীনে আসার পর, সত্যিই চীনে পড়াশোনা, জীবন কাটানোর পর, তিনি অনুভব করতে পারেন যে, চীনে জীবন কতটা সুবিধাজনক। মেরিসা বলেন, “মোবাইলফোন পেইমেন্ট সত্যিই সুবিধাজনক। বাইরে যাওয়ার সময় শুধু ফোন ও ইন্টারনেট থাকলেই যথেষ্ট।”
বেইজিংয়ে আসার আগে, মেরিসা শোনেন যে, বেইজিংয়ের গতি তুলনামূলক দ্রুত, তিনি চিন্তা করেন- এখানকার জীবনের সাথে খাপ খাওয়ানো কঠিন হবে। কিন্তু এখানে আসার পর তিনি যেন বাড়িতে ফিরে আসার অনুভব লাভ করে। তিনি বলেন, “আমাদের চীনা বন্ধু অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ। এখানে আমার অনেক নতুন বন্ধু আছে, বিশেষ করে অনেক চীনারাও রাশিয়ান ভাষা শিখছে। তারা আমার দেশ সম্বন্ধে অনেক আগ্রহী, যেমন, তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করছে যে, আমি কীভাবে চীনা ভাষা শিখেছি, রাশিয়ানদের জীবন কেমন, কিছু বিশেষ অভ্যাস আছে কিনা ইত্যাদি।”
বর্তমানে, মেরিসা বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি গবেষণায় ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং আগামী চার বছর চীনে পিএইচডি-র জন্য অধ্যয়ন করবেন। তিনি তার নিজের চেষ্টার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ঘনিষ্ঠ বিকাশে নিজের অবদান রাখতে চান। মেরিসা বলেন, “আমাদের সম্পর্ক দিন দিন ঘনিষ্ঠ হয়েছে, আমরা সবসময় একে অপরকে সমর্থন করছি এবং আমাদের সহযোগিতা অনেক মসৃণ, তাই ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা আছে। অবশ্যই, আমি চীন ও রাশিয়ার উন্নয়নে আমার অবদান রাখতে চাই। যেমন, চীনা সংস্কৃতির প্রচার করা ইত্যাদি। রাশিয়াকে চীনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আমি রাশিয়ানদের সাথে চীনকে পরিচয় করিয়ে দিই এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরিতে অবদান রাখব।”
সূত্র : চায়না মিডিয়া গ্রুপ