আব্বাছ হোসেন/ মাহমুদ ফারুক:
লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনার মামলার প্রধান আসামি ও থানা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম জিহাদীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার রাত ৯টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আবুল কাশেম জিহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং বশিকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। আলোচিত জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, ‘গত ২ মে একটি জরুরি সভায় আবুল কাশেম জিহাদীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন দেশের বাইরে থাকায় এটি বাস্তবায়ন করতে সময় নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তিনি দেশে আসার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-গোলাম ফারুক পিংকু ও সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের নির্দেশক্রমে আজকে সেটা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’
এর আগে চন্দ্রগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এতে করে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। তাই চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবুল কাশেম জিহাদীকে দলীয় পদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেন তাঁরা।
এদিকে আলোচিত এই জোড়া খুনের মামলায় সরাসরি জড়িত থাকার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর দেওয়ান ফয়সাল, আলমগীর হোসেন ও লিটন ওরফে চাঁন মিয়াসহ মোট ১৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যে এই তিন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। কিন্তু হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশে জিহাদী ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা। তাঁকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, ২৫ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকায় যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় তাঁদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান। ২৬ এপ্রিল রাত ১টার দিকে নিহত নোমানের বড় ভাই ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫ জনসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।