শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
Logo সারাদেশের সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা Logo কোটা সংস্কার আন্দোলন: দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত ৫ Logo বিদ্যালয়ে না এসে বেতনভাতা উত্তোলন; বদলি হলেন বিতর্কিত সে-ই প্রধান শিক্ষক Logo নতুন যুগে চীনের সংস্কারনীতি: মূল উদ্দেশ্য চর্চা করে উদ্ভাবনী উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা Logo চীন সামুদ্রিক পরিবেশের মান অব্যাহতভাবে উন্নত করেছে:শ্বেতপত্র প্রকাশ Logo চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য সুযোগ প্রদান অব্যাহত রাখবে:সিএমজি’র সিজিটিএন পরিচালিত জরিপ Logo সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরনের জন্মদিন পালন হলো হাডসন নদীর বুকে Logo চীন বাংলাদেশকে জাতীয় উন্নয়নে সহায়তা করতে ইচ্ছুক:হাসিনার সাথে বৈঠকে সি Logo মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ প্রচার করা:চীনে দশম বিশ্ব সভ্যতা ফোরাম Logo ভারত-চীন সম্পর্কের বৈশ্বিক তাৎপর্যও রয়েছে: বিশেষ বার্তায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নোটিশঃ
যে কোন বিভাগে প্রতি জেলা, থানা/উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘bdpressnews.com ’ জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিক নিয়োগ ২০২৩ চলছে। বিগত ১ বছর ধরে ‘bdpressnews.com’ অনলাইন সংস্করণ পাঠক সমাজে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাঠকের সংখ্যায় প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছে তরুণ, অভিজ্ঞ ও আন্তরিক সংবাদকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ‘bdpressnews.com‘ পত্রিকায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার এ ধাপ

৫৩ তম সীমান্ত সম্মেলনে যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষর

মশিউর আনন্দ: / ৮৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০২৩, ১০:২৩ অপরাহ্ন

মশিউর আনন্দ: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৩তম সীমান্ত সম্মেলন ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, বিএএম, এনডিসি, পিএসসি (Major General A K M Nazmul Hasan, BAM, ndc, psc) এর নেতৃত্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে, বিএসএফ মহাপরিচালক ড. সুজয় লাল থাওসেন, আইপিএস (Dr. Sujoy Lal Thaosen, IPS) এর নেতৃত্বে ভারতের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন।
গত ১১ জুন ২০২৩ তারিখ সকালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীস্থ বিএসএফ চাওলা ক্যাম্পে এ সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সম্মেলনে- সীমান্ত হত্যা নিরসন, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার, মানব পাচার রোধ, স্বর্ণ ও অস্ত্র চোরাচালান রোধসহ বিভিন্ন ধরনের আন্ত:সীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ এবং পারস্পারিক সম্প্রীতি ও আস্থা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। ০৪ দিনব্যাপী অত্যন্ত ফলপ্রসু আলোচনা শেষে ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সম্মেলনটি শেষ হয়।
এবারের সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে
প্রথমত বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা/আহতের ঘটনা জোরালো ভাবে তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বিএসএফকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনার জন্য আহবান জানান। সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিএসএফ মহাপরিচালক আন্তরিকতার সাথে আশ্বাস প্রদান করেন। এক্ষেত্রে বিএসএফ এর পক্ষ থেকে নন-লেথাল নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সীমান্তে উভয়পক্ষ পেশাদারিত্বের সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে সম্মত হয়। তন্মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথ টহল বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী অব্যাহত রাখা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ, তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য আদান-প্রদান এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
দ্বিতীয়ত: আন্ত:সীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ, অস্ত্র, জাল মুদ্রার নোট প্রভৃতি চোরাচালান রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (Coordinated Border Management Plan-CBMP) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর উভয় পক্ষ হতে গুরুত্বারোপ করা হয়। উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকটি বর্ণিত অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে উভয়পক্ষ কর্তৃক তথ্য আদান প্রদান করা হয়। এবিষয়ে ভবিষ্যতে অপরাধীদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ে শেয়ার করতেও উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে উভয় দেশের নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যাপারে উভয় পক্ষ কর্তৃক গুরুত্বারোপ করা হয়।
চতুর্থ, ভারতে বসবাসকারী বলপূর্বক বাস্তচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের ভারত হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধে বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি উভয় দেশের দালাল চক্র দমনে পরস্পরকে সহায়তা প্রদানে উভয়পক্ষ সম্মত হয়।
পঞ্চম, বাংলাদেশ থেকে বম জনগোষ্ঠী ভারতের মিজোরামে চলে যাচ্ছে বলে বিএসএফ কর্তৃক তথ্য উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে বিজিবি মহাপরিচালক জানান, ভৌগোলিক ও সংস্কৃতিক ঐক্যের কারণে ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেরই পার্বত্য সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। উভয় দেশে তাদের আত্মীয়-পরিজনরা বসবাস করছে। সম্প্রতি পাহাড়ী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি দমনে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান। Propaganda’র অংশ হিসেবে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে KNA সন্ত্রাসীগোষ্ঠী জোরপূর্বক মিজোরামে পাঠিয়ে থাকতে পারে। এক্ষেত্রে জাতীয়তা নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
ষষ্ঠ, বিএসএফ মহাপরিচালক সন্দেহভাজন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিজিবি ও বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। এ প্রেক্ষিতে বিজিবি মহাপরিচালক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে জানান, বাংলাদেশ কখনও তার ভূমি অন্য কোন রাষ্ট্রের সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রয়োজনে ব্যবহারের সুযোগ দেয় না; ভবিষ্যতেও দেবে না। বর্ণিত প্রসঙ্গে বিজিবি কর্তৃক ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করা হয়। এব্যাপারে বিএসএফ হতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করা হয়। উভয়পক্ষ আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদারেপারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়।
সপ্তম, বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশে সীমান্তের অভ্যন্তরে ভারতের কিছু সংখ্যক অপ্রত্যাশিত টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের নেতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরেন এবং এবিষয়ে বিএসএফকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান। একইভাবে বিএসএফ মহাপরিচালকও ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক বিস্তারের বিষয়টি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষ দুই দেশের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সুবিধা ব্যবহার করে সীমান্তে সংগঠিত অপরাধ রোধে সংশ্লিষ্ট দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে একমত হয়।
অস্টম, উভয়পক্ষ পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য গৃহীত নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে একমত হন। উভয়পক্ষ আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা, শুভেচ্ছা সফর, প্রশিক্ষণ বিনিময় কর্মসূচি, দু’দেশের মিডিয়াকর্মীদের পারস্পরিক সফর বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছেন।
নবম, বিজিবি মহাপরিচালক ভারতের আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে প্রবাহিত চারটি খালের মাধ্যমে বর্জ্য পানি নিস্কাশনের ফলে বাংলাদেশ অংশে পরিবেশ দূষণ রোধে Effluent Treatment Plant (ETP) স্থাপনের কথা পুনর্ব্যক্ত করলে বিএসএফ বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
দশম,উভয়পক্ষ পূর্বানুমতি ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ শুরু না করার ব্যাপারে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজ জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন। তবে এবারের সম্মেলনে সব থেকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় বন্ধ থাকা উল্লেখযোগ্য ০৫টি কাজ চালু করার ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। এগুলো হলো- রামগড় স্কুল বিল্ডিং এর অসম্পন্ন কাজ; তিন বিঘা করিডোর এলাকায় ঝালংগী পকেট এবং ভিতরবাড়ি পকেট এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন; শেরপুর জেলার ভোগাই নদীর তীর সংরক্ষণ; জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদী ও রহিমপুর খালের সংযোগস্থল পুনঃখনন এবং নেত্রকোনা জেলার ভবানীপুর সীমান্তে ১.৪৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ। বর্ণিত উন্নয়নমূলক কাজগুলো সীমান্তবর্তী জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
উভয়পক্ষ মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন সুবিধাজনক সময়ে ঢাকায় অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Design & Developed by : BD IT HOST